অনেকে আমাকে বলেন যে তারা কনফিউজড যে ক্যারিয়ারে কোন পথ বেছে নিবেন। যেমন একজন আমাকে বললেন যে বড় ভাই তাকে বলেন যে সিজিপিএ ভালো রাখা আর সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট শিখা একসাথে সম্ভব নয়। তো সিজিপিএ ভালো রাখলে ইউনিভার্সিটিটে টিচার অপশন আছে, অন্যদিকে সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট শিখলে প্রোগ্রামার হওয়া যাবে। কিন্তু যারা প্রোগ্রামিং এ ভালো করতে পারছে না তাহলে তারা কি সিজিপিএ ভালো করার দিকে মন দিবে যাতে টিচার হওয়া যায়?
আবার অনেকে তাকে বলে বিসিএস দিয়ে সরকারী চাকরি ধরে ফেল। সারা জীবন কষ্ট করে মরার দরকার কি, সরকারী অফিসার হলে কিভাবে টাকা আয় হয় আর কত দাম সেটা তো আমরা সবাই জানি তাইনা। অফার কিন্তু খারাপ না।
তো এই শিক্ষার্থীটি কি করবে, কার কথা শুনবে সে, কোন দিকে যাবে?
আমার মতে এখানে আপনাকে একটু নিজের বিষয়ে ভাবতে হবে। জীবনে কোনটা সঠিক পথ আর কোনটা ভুল, তা অনেক কিছুর উপর নির্ভর করে। যেমন একজন যদি বলে যে আমি কেন রাত ১০ টায় বাসায় ফিরবো? কেন আমি সারাজীবন পড়তে পড়তে মারা যাবো? আমি তো একটা ব্যাংকে বা সরকারী চাকরিতে ঢুকে যেতে পারি, আরামে থাকবো।
এখানে ভুল কি? আদৌ কি কোন ভুল আছে? না, কোন ভুল নেই। যে যেভাবে চিন্তা করে বা যা চায় তার লক্ষ্য সেরকম হওয়া উচিৎ। সবাই একই পথে হাঁটবে এটা আশা করা বোকামি আর সেটা কাজও করে না।
জীবনে অসংখ্য পথ আছে সামনে যাবার। আপনি কোনটাকেই সঠিক বা ভুল বলতে পারেন না। এটা নির্ভর করে আপনি কোন পথকে কিভাবে কাজে লাগিয়েছেন।
একজন যে সরকারী চাকরিতে গেল আর তারপর সহজ জীবন যাপন শুরু করলো। ধরি তার সেলারি ৪০,০০০ টাকা। তার কিছু বন্ধু সফটওয়্যার কোম্পানিতে কাজ করে ৭০,০০০ টাকা বেতন পায়। কিন্তু তারা সারা দিন গাধার মত পরিশ্রম করে, জীবনে কোন শান্তি নেই, নিরাপত্তা নেই, সম্মান নেই। আর সে কিছু উপরি আয় করে ৮০,০০০ – ৯০,০০০ টাকা কামিয়ে নিতে পারে। তাহলে সে যখন তার সেই সফটওয়্যার কোম্পানিতে কাজ করা বন্ধুর পাশে দারাবে তখন সে কি জয়ী নয়? অবশ্যই।
এবার এই লোকটির একদিন একজন নামকরা সফটওয়্যার আর্কিটেক্ট এর সাথে কথা হল। কথায় কথায় জানতে পারলেন সে মাসে ১০ লক্ষ টাকা আয় করে, তার নিজের প্রাইভেট জেট আছে। বিদেশে ডুপ্লেক্স বাড়ি আছে। আরও জানা গেল সে এসব আয় করতে পেড়েছে জীবনে জটিল আর কঠিন চ্যালেঞ্জ নিয়ে। তাকে এর জন্য অনেক কঠিন পথ পারি দিতে হয়েছে। এখন এই সরকারী চাকরি করা লোকটি যদি চিন্তা করে যে সে কোনদিন তার মত এত উপরে উঠতে পারবে না। কিন্তু এগুলো তার পেতে ইচ্ছা হয়, তাহলে সে নিজেকে পরাজিত চিন্তা করবে সেই আর্কিটেক্টএর সামনে। আবার যদি সে চিন্তা করে যে না আমার এত কিছু দরকার নেই, আরাম করে যেমন আছি তাতেই ভালো আছি, তাহলে আবার সে নিজেকে ভালো আছে মনে করবে।
এখন সেই আর্কিটেক্ট যদি এই সরকারী চাকরিজীবীর সাথে কিছু সময় কাটায়, তাহলে হয়ত তার এই লোকের জীবন জঘন্য মনে হবে। তার মনে হবে একটা মাথামোটা গাধা পরজীবীর মত জীবন যাপন করছে, আর তার নিজের জীবনকে উন্নত করার বিষয়ে তার কোন ধারণাই নেই। তাহলে আর্কিটেক্ট তাকে অনেক পরাজিত মানুষ মনে করবে।
উপরের উদাহরণে আমি সংক্ষেপে বুঝাতে চেষ্টা করলাম যে জীবনে কে সফল কে বিফল এটা কতো কিছুর উপর নির্ভর করে। গ্রামের চেয়ারম্যান হওয়াকে অনেকে দেশের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার মত সম্মানের মনে করে। কিন্তু তার জন্য সেটাই ঠিক আছে। কাজেই আমাদের প্রত্যাশা, আমাদের লক্ষ্য, আমাদের জীবন দর্শন এসবকিছু আমাদের জীবনের সফলতা বিফলতার সংজ্ঞা তৈরি করে। একজনের কাছে যেটা সফলতা আরেকজনের কাছে সেটা বিফলতা।
আর একারণেই নিজের সফলতার সংজ্ঞা নিজেকে নির্ণয় করতে হবে। আপনাকে ঠিক করতে হবে, আপনি জীবনে কি হতে চান, কেমন জীবন চান। তারপর কিভাবে সেটা অর্জন করবেন সেটা দেখা যাবে।
যখন আপনি নিজের লক্ষ্য ও সফলতার সংজ্ঞা ঠিক করে ফেলবেন, তখন আপনার জন্য সেটা অর্জন করা সহজ কাজ হয়ে যাবে। অন্যদের কাছে যা অসম্ভব সেটা তখন আপনার কাছে সম্ভব মনে হবে। তাই কে কি বলল সেটাতে কান না দিয়ে বরং বুঝার চেষ্টা করুন আপনি কি চান – আপনি কি পরিশ্রম, চ্যালেঞ্জ ভরা জীবন চান, যেখানে অনেক কিছু অর্জন করার সুযোগ আছে কিন্তু কষ্ট করতে হবে অনেক, নাকি আপনি সহজ জীবন চান যেখানে আপনাকে হয়ত অনেক বেশি কিছু অর্জনের সুযোগ দেয়া হবে না, তবে আপনি নিজের ছোট দুনিয়াতে নিজেকে নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে পারবেন।
অনেকে যারা পরিশ্রম করতে পছন্দ করে না, তারা যদি চ্যালেঞ্জ ভরা জীবনের পথ বেছে নেয় তাহলে সে না পারবে সেখানে ভালো করতে না পারবে ফেরত যেতে। অন্য দিকে যে জীবনে অনেক কিছু করতে চায়, চ্যালেঞ্জ চায়, সে বোরিং সহজ জীবনে গেলে সারা জীবন পস্তাবে। তাই বুঝে শুনে নিজের সিদ্ধান্ত নিজে নিন। নিজের জীবনের সিদ্ধান্ত নিজে নিবেন, অন্য কাউকে প্রশ্ন করবেন না যে আপনার জন্য কোনটা ভালো।
মোঃ জালাল উদ্দিন,
প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও, ডেভস্কীল.কম
ডেভস্কীলের কিছু বিশেষ সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্স –
Informative post. Thank you sir for your suggestion.
জালাল ভাই
একটা প্রশ্নের উত্তর আশা করি দেবেন
আমি ইন্টার পরিক্ষা দিয়েছিলাম এবং আলহামদুলিল্লাহ দুইটা বিষয়ে ফেইল করছি
আমার লেখাপড়া একদম ভাল লাগে না
আমি এখন রাতে ৬ থেকে ৭ ঘন্টার মত প্রোগ্রামিং করি।বাকি সময় গনিতে রবই পড়ি।
C++ প্রোগ্রামিং আমার প্রিয় ভাষা।
সপ্ন এপলের সফটওয়ার ডেভলপার হওয়া।কীন্তু পরিবার থেকে পড়ালেখার অনেক চাপ।কীন্তু পার্ঠ্যবই এক ঘন্টা পড়লেই আর পড়তে পারি না।
তাই দুই মাস পর পরিক্ষা থাকার পর ও রাত জেগে প্রোগ্রাম করি
আমার এখন কী করা উচিৎ?
কিছু মনে করবেন না, কিন্তু আপনার কথার মধ্যে আমি বেশ কিছু সমস্যা লক্ষ্য করি। ২টি বিষয়ে ফেল করার মধ্যে কি আপনি কৃতিত্ব দেখতে পচ্ছেন? লেখাপড়া আপনার ভালো লাগে না, আপনি অনেক প্রোগ্রামিং করেন, কিন্তু আপনার এই লেখাতেই একগাদা বানান ভুল। আর বেশিরভাগই মনে হল খামখেয়ালীর কারণে হয়েছে। প্রোগ্রামিং এর দুনিয়া কত বিশাল সেই সম্পর্কে আপনার ধারণা নেই। শুধু প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ শিখে ভালো প্রোগ্রামার হওয়া যায় না। এর জন্য ধৈর্য, বিচক্ষণতা ও আরও অনেক মানবিক গুণাবলীর প্রয়োজন আছে। আপনি যদি ঠিক মত লেখাপড়া না করেন, তার মানে আপনি দায়িত্বজ্ঞানহীন। আর সেক্ষেত্রে আপনি যত ভালো প্রোগ্রামারই হন না কেন, আমি আপনার হাতে আমার প্রোজেক্টের দায়িত্ব দিতে রাজি থাকবো না। আমি এমন মানুষ দলে চাইব না যে তার নিজের ভালো লাগাকেই সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দেয়। কাজেই আমি মনে করি আপনি বিষয়টি চিন্তা করে নিজের সমস্যাগুলো দূর করবেন। প্রোগ্রামিং ভালো লাগা ও এটাতে বেশি সময় দেয়াতে দোষের কিছু নেই, কিন্তু তার মানে এই না যে এটাই সব। একজন দক্ষ সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার জন্য অনেক গুণাবলী প্রয়োজন।
Jalal Vai,
How to become a software architect from a full stack position?
Try to investigate various software to understand architecture. Also learn about various architectures and their use cases.
“যে জীবনে অনেক কিছু করতে চায়, চ্যালেঞ্জ চায়, সে বোরিং সহজ জীবনে গেলে সারা জীবন পস্তাবে। তাই বুঝে শুনে নিজের সিদ্ধান্ত নিজে নিন।”
So True
বর্তমানে 5th semester এ আছি,গত ২ সেমিস্টারে বলতে গেলে কম্পিটিটিভ প্রোগ্রামের ধারে কাছেও ছিলাম না, c এর syntax মোটামুটি ক্লিয়ার, আর কিছু পারি না।ক্যরিয়ার নিয়ে পুরোপুরি অন্খধকারে নিমজ্জিত,সিজিপিএ ৩.৫ এর মতো।
কেউ বলে php করো, asp.net করো ডেভেলপার হয়ে যায়ও, কেউ বলে পাইথন করো,কেউ বলে Android করো, এখন বুঝতেসি কষ্ট করতেই হবে,কিন্তু অল্প যে ২ বছর সময় আছে তা কোথায় invest করবো বুঝতেসি না।
Can You suggest a guideline for backend software development?